Header Ads

বিপর্যয় অর্থনীতিকে বাঁচাতে মরিয়া মস্কো


 

বিপর্য অর্থনীতিকে বাঁচাতে মস্কো কৃষ্ণসাগরে বিকল্প পুরনো একটি বাণিজ্য পথকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে। এতে এগিয়ে এসেছে ভারত ও ইরান । ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর  নামে এ রুটটি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে শুরু করে মস্কো, ইরানের তেহরান, ইস্পাহান হয়ে ভারতের মুম্বাই আসবে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ হাজার ২০০ কিলোমিটার।  দুই দশকের বেশি সময় ধরে এই রুটকে বিশ্ববাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে মস্কো। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে সেই স্বপ্নপূরণে অনেকটা সহায়ক হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেকরা। 

 





ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণসাগর হয়ে শস্য রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারের খাদ্যশস্যের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। তাই কৃষ্ণসাগরের রুট বন্ধ রাখলেও বিকল্প হিসেবে পুরনো একটি রুট সক্রিয় করার চেষ্টা করছে মস্কো। ভারত-ইরানকে নিয়ে এই নতুন বাণিজ্যপথটি চালুর উদ্যোগ ছিল অনেক আগে থেকেই




গত কয়েক দিন আগে রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের নেতাদের সঙ্গে তেহরানে পুদিনের সঙ্গে এক বৈঠকে জাহাজ চলাচলের নতুন রুট নিয়ে আলোচনা হয়।ইরানের রাষ্ট্র পরিচালিত ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান শিপিং লাইন  এই বানিজ্য পথ তৈরিতে কাজ করছে। নতুন রুটে রুশ পণ্যবাহী জাহাজগুলো ইউরোপের নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা করে পাস কাটিয়ে ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর দিয়ে ভারতে পৌঁছাতে পারবে। গত মাসে ট্রায়াল পর্বে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে পণ্যবোঝাই একটি জাহাজ ভারতের দিকে যাত্রা করে।


জাহাজটি রাশিয়ার আস্ট্রাখান বন্দর থেকে কাস্পিয়ান সাগরের আনজালি এবং পারস্য উপসাগরে ইরানের বন্দর আব্বাস হয়ে মাসের শুরুতে ভারতে পৌঁছায়।গত জুনে ইরান প্রথমবারের মতো একটি পাইলট প্রকল্প ঘোষণা করে। এই রুট ধরে দেশটির বন্দর আব্বাস থেকে দুই কনটেইনার রাশিয়ার তৈরি পণ্য ভারতে পাঠায় ইরান। জুলাইয়ে এই রুট ধরে ভারতে আসে আরও ৩৯ কনটেইনার পণ্য। ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েটের পরামর্শদাতা বৈশালি বসু শর্মা বলেন, বাণিজ্যপথে কনটেইনার ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এই রুট দিয়ে বছরে প্রায় আড়াই কোটি টন পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পণ্যের ৭৫ শতাংশ পরিবহণ করা হবে ইউরেশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরীয় অঞ্চলের মধ্য দিয়ে। বিশ্লেষকের মতে এই বাণিজ্যপথ দ্রুত সক্রিয় করা এখন রাশিয়া ও ভারতের উপর নির্ভর করবে

 




রাশিয়ার বেশিরভাগ পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ইউরোপ কেন্দ্রিক। তাই ইউক্রেন যুদ্ধে বড় ধাক্কা খেয়েছে মস্কো। অন্যদিকে ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, চীন ও পশ্চিমের দেশগুলোয় বাণিজ্য বিস্তারে আগ্রহী। তাই এই সুযোগে ভারতের এত দিনের মনকামনা পূর্ন হতে চলেছে ।তবে ভারতের সামনে এ ক্ষেত্রে একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। আমেরিকা কখনই চাইবে না দিল্লি ও মস্কো কাছাকাছি আসুক। তবে দিল্লির ওপর আমেরিকা ও ইউরোপ কতটা চাপ প্রয়োগ করতে পারে সেটাই দেখার। এই চাপ দিল্লি কীভাবে সামাল দেবে তার ওপর নির্ভর করবে এই বাণিজ্য পথের ভবিষ্যৎ।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ