বাংলায় উদীয়মান রাজনৈতিক শক্তি :
আমাদের
রাজ্যে ১৯৪৭ সালের পর থেকে তফসিলি জাতির একটা বিরাট অংশের মানুষ ওপার বাংলা থেকে আসেন।
যারা মূলত নমঃশুদ্র সম্প্রদায়ের আর্থিক সঙ্গতিহীন মানুষ।
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪
পরগনা এবং নদীয়া জেলা জুড়ে আছেন এই সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা।এদের ভিতর আবার খুবই গুরুত্বপূর্ন সম্প্রদায় হল মতুয়া সম্প্রদায়।
রাজ্যে
তফসিলি জাতিদের মধ্যে রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষেরা বাস করেন মূলত কোচবিহার , জলপাইগুড়ি , শিলিগুড়ি , উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিন দিনাজপুর
জেলার বিভিন্ন অংশে।
ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তফসিলি জাতির মানুষ বাস করেন এই কোচবিহার জেলায় ।
১৯৭৭
থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থেকে ভূমিসংস্কার কর্মসূচিকে কাজে লাগিয়ে রাজবংশীদের মন জয় করে নেয়, যার
ফলে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সমস্ত তফসিলি জাতি/তফসিলি উপজাতি
সংরক্ষিত আসন বামফ্রন্ট কবজা করে নেয়।
অন্যদিকে
বীরভূম, বাকুড়া,পুরুলি্য়া
ও পশ্চিম মেদিনীপুর
জেলায় দুলে,বাগদি সম্প্রদায়
ছিল অপ্রতিরোধ্য।
কৃ্ষক সংগঠনের মাধ্যমে বামেরা এক সময় বাংলায় এই সব সম্প্রদায় একত্রিত করে মজবুত সংগঠন গড়ে তুলেছিল।
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে সিঙ্গুর , নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে সামনে রেখে মমতা বন্দোপাধ্যায় বামেদের চারিদিক দিয়ে ঘিরতে শুরু করেন । সেই সময় থেকে মতুয়া সম্প্রদায়কে সুকৌশলে ধীরে ধীরে কাজে লাগিয়ে বামেদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে শুরু করেন । এই সময় থেকে মতুয়াদের ধর্মস্থান ঠাকুর নগরে ঠাকুর বাড়ি ও মতুয়া সম্প্রদায়ের মা বীনাপানি দেবির সঙ্গে সখ্যতা বাড়াতে থাকেন । যার ফল সরূপ ২০১১ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনা , দক্ষিন ২৪ পরগনা ও নদীয়া জেলায় মতুয়াদের ভোটে তৃ্নমূ্ল কংগ্রেস আশাতীত ফল করে। ২০১১ ও ২০১৪ সালের ভোটে রাজ্যের ৬৮ টি তফসিলি জাতি ও ১৬ টি তফসিলি উপজাতির সংরক্ষিত মোট আসন ৮৪ টি । তার মধ্যে অধিকাংশ আসন পায় তৃ্নমূ্ল কংগ্রেস ।
মতুয়াদের এই ভোট ব্যাংক দেখে গেরুয়া শিবির আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। রাজ্যে প্রায় ৫ কোটি ভোটার তাদের । তারপর সরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত সাহ থেকে আরম্ভ করে প্রধান মন্ত্রী মোদি জি পর্যন্ত সবাই মতুয়া ভোট পাওয়ার জন্য ঠাকুর বাড়ি যান । এমন কি গুঁরুচাদ ঠাকুরের জন্ম স্থান বাংলাদেশর ওড়াকান্দি পর্যন্ত চলে যান । তার ফল তারা হাতে হাতে পায় ২০১৯ শের লোকসভা ভোটে ।
অন্যদিকে এ সব দেখে বহুজন সমাজ পার্টিও হাত গুঁটিয়ে বসে নেই , বহিন মায়াবতী জির আদেশে দিল্লির নতুন রাজ্য কো অডিনেটর ধরম বীর সিং অশোক গৌতম জির মাধ্যমে দলিত,মুসলিম , আদিবাসী ও মতুয়া অধ্যষিত এলাকায় বাবা সাহেব ডঃ বি আর আম্বেদকরের আদর্শ প্রচার করে পার্টিকে মজবুত করার চেষ্টা করছে। আগামী.২০২৪ শে লোকসভা ভোটে দিকে পাখির চোখ করে এগোছে ।
কিন্ত পরিতাপের বিষয় হল কংগ্রেস , বাম , বিজেপি ও তৃনমূল কংগ্রেস কোন পক্ষই এদেরকে ভোট ব্যাংকের উদ্ধে তুলে ধরার কথা ভাবেনি বা তাদের আর্থিক ও সামাজিক ভাবে কোন উন্নতি করে নি , ভাবেনি তাদেরকে নেতৃত্ব পদে তুলে আনার কথা । তাদের মধ্যে থেকে প্রকৃ্ত গ্রহণ যোগ্য নেতা বা নেত্রি তৈ্রি করার কথাও । আজ সমস্ত মনুবাদী রাজনৈ্তিক দলগুলিতে উচ্চবর্নের নেতা বা নেত্রীর দেখা যায় বেশি । সেই সব রাজনৈ্তিক দলে কোন তফসিলি জাতি বা উপজাতির কোন নেতা নেই । তাদেরকে রাজনৈ্তিক বা ধার্মিক গোলামের জালে পরিণত করেছে । যতদিন ধার্মিক ও রাজনৈতিক গোলামির বেড়াজাল থেকে মুক্তি না পায় ততদিন দলিত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের মুক্তি নেই ।
তাই উত্তরপ্রদেশে জাত তোড় সমাজ জোড় এর মাধ্যমে বহুজন সমাজ পার্টি এগিয়ে চলেছে।ভোট আমাদের, রাজা তোমাদের , চলবে না, চলবে না ।
0 মন্তব্যসমূহ
Do not share any Link